December 23, 2024, 1:09 pm
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তে প্রায় আড়াই বছর ধরে বাধ্যতামূলক ছুটিতে থাকার পর পাঠদানে ফেরার দাবিতে বিভাগের সামনে অবস্থান করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. রুশাদ ফরিদী। গত মঙ্গলবার থেকে টানা তিন দিন ধরে বিভাগীয় চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছেন এই শিক্ষক। তার অভিযোগ, আদালতের রায়ের পরও তাকে ক্লাসে ফিরতে দেয়া হচ্ছে না।
জানা যায়, ২০১৭ সালে অর্থনীতি বিভাগের কয়েকজন শিক্ষকের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন সিন্ডিকেট ড. রুশাদ ফরিদীকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠায়। ওই বছরের ১২ জুলাই তাকে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য ছুটিতে পাঠানোর চিঠি দেয় সিন্ডিকেট। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, বিভাগের অন্য শিক্ষকদের নিয়ে বাজে মন্তব্য করা, শিক্ষক সুলভ আচরণ না করা প্রভৃতি।
এদিকে সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উকিল নোটিস পাঠান ড. ফরিদী। নোটিসের জবার না পেয়ে ওই বছরের ১৯ জুলাই উচ্চ আদালতে রিট করেন তিনি। পরে ২৪ জুলাই উচ্চ আদালত থেকে রুল জারির পর এ বছরের ২৫ আগস্ট উচ্চ আদালতে একটি বেঞ্চ ড. রুশাদ ফরিদীর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের দেওয়া আদেশ অবৈধ ঘোষণা করে। একই সঙ্গে তাকে কাজে যোগদান করারও নির্দেশ দেয়া হয়। তবে আদালতের রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি এখনো হাতে পাননি তিনি।
রায়ের কপির পরিবর্তে সোমবার তিনি আইনজীবীর প্রত্যয়নপত্র (ল-ইয়ার্স সার্টিফিকেট) ও যোগদানের কাগজপত্র বিভাগের অফিসে জমা দিতে গেলে চেয়ারম্যানের অনুমতি ছাড়া কোনো চিঠি গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানান অফিসের কর্মকর্তারা। এরপর বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শফিক-উজ জামানও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া কোনো কিছু করতে পারবেন না বলে তাকে জানিয়ে দেন।
এ অবস্থায় মঙ্গলবার ক্লাসে ফেরার দাবিতে চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের সামনে প্লাকার্ড হাতে অবস্থান নেন রুশাদ ফরিদী। প্লাকার্ডে লেখা ‘আমি শিক্ষক, আমাকে ক্লাসে ফিরতে দিন’। গতকালও কর্মসূচি পালন করেন তিনি।
এ সময় তার সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন শামসুন নাহার হলের ভিপি শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি, ছাত্র ফেডারেশনের ঢাবি শাখার সভাপতি আবু রায়হান খানসহ আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী। এর আগে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সামনে মানববন্ধন করে ঢাবি শাখা ছাত্র ফেডারেশন।
এ বিষয়ে ড. রুশাদ বলেন, বিভাগের বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলায় তার বিরুদ্ধে প্রতিহিংসামূলকভাবে অভিযোগগুলো আনা হয়েছিল। এসব অনিয়ম নিয়ে বিভাগের চেয়ারম্যানের কাছে ৭টি চিঠিও পাঠিয়েছিলেন বলে জানান তিনি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চাইলে এক ঘণ্টার মধ্যে তার বিষয়টি সমাধান করতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, উচ্চ আদালত থেকে যে নির্দেশনা আসবে, আমরা সেই অনুযায়ী কাজ করব। রায়ের কপি এলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব। সবকিছু আইনের মধ্য দিয়েই করতে হবে।